কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা

কলা খাওয়ার উপকারিতা ও কলা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে লিখা হয়েছে আমাদের আজকের ব্লগ।কলা খাওয়ার ফলে উপকারিতা এবং অপকারিতা দুটোই হয়ে থাকে। কলার মধ্যে অনেক পুষ্টিকর গুনাগুন আছে বলেই, কলা সবার পছন্দের ফল। কলা ফলটির নাম অল্প শব্দের হলেও , এর মধ্যে অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। 


আমরা আর বেশি কথা না বলে এখন কলা খাওয়ার উপকারিতা কি এবং কলা খাওয়ার  অপকারিতা কি সম্পর্কে আলোচনা করি।

কলা খাওয়ার উপকারিতা কি?

সবার পছন্দের ফল কলা। তাই সবারই জানতে ইচ্ছা করে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আমরা আর পাঁচটি পয়েন্টের মাধ্যমে এই সম্পর্কে জানব-

প্রাকৃতিক সুস্বাদঃ কলা একটি স্বাস্থ্যকর ফল। কলা খেতে অনেক সুস্বাদু লাগে। কলা খেয়ে শরীরে যেরকম শক্তি হয় সেরকম মুখে অনেক সুস্বাদু মনে হয়। আপনারা কি জানেন কলা কে খাদ্য হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে কেন, এতে বেশি পরিমাণ ভিটামিন সি এবং পটাশিয়াম রয়েছে। তাছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী উপাদান।

পুষ্টিকরঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা উক্তিটি বলা হয়েছে যার জন্য সেটি হল এই পুষ্টিকর। কলায় রয়েছে ভরপুর প্রোটিন,ফাইবার , ওয়াটার কোম্পানর ।এতগুলো খনিজ পদার্থ রয়েছে শুধুমাত্র এই পুষ্টিকর ফল কলাতে। কলা যেরকম সস্তা সেরকমই উপকারী। কলা খেয়ে শরীরের বিভিন্ন রোগ সমাধান করা যায়, যেমন কলা খেলে শরীরের সুস্থভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায় । তাছাড়াও যাদের পাঁচন প্রক্রিয়ায় সমস্যা রয়েছে তারা কলা খেয়ে পাচন প্রক্রিয়ার সমস্যা সমাধান করতে পারেন। তাছাড়াও কলাতে ভিটামিন সি ভিটামিন বি এবং ফাইবার রয়েছে ।যা আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কারণ এতে আরো রয়েছে পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

শক্তি বৃদ্ধিঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে এটিকে বলা হয় প্রাকৃতিক এনার্জি বার। যারা খেলোয়াড় কিংবা নিয়মিত শরীর চর্চা করেন তাদের শরীরে অনেক শক্তি খরচ করতে হয়। আবার যারা দিনমজুরি কিংবা কৃষি কাজ করেন তাদেরকে অনেক কাজ করতে হয় যার কারণে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়। গলাতে উপস্থিত রয়েছে কার্বোহাইড্রেট যা শরীরের শক্তি প্রদান প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে, এর ফলে শরীরে দ্রুত শক্তির উৎপাদন হয়।

হজমের সহায়কঃ কলাতে রয়েছে ফাইবার। ফাইবার আমাদের শরীরের ভজন এ ভূমিকা রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভূমিকা রাখে ।কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে হজমে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহজ হয়। কলা খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে হজমের সমস্যার একটি প্রাকৃতিক সমাধান।

শরীর নিয়ন্ত্রণঃ কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন কিছু সুরক্ষা এবং নিয়ন্ত্রণ হয়। কলা উচ্চ পটাশিয়াম প্রধান শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন একটি করে কলা খেলে উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা কমে যায়। তাছাড়াও কলা খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে হৃদ যন্ত্রের সুরক্ষার কথা না বললেই হয় না। কলাতে উপস্থিত পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম হৃদপিন্ডের কাজকে উন্নত করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ফলায় অবস্থিত তৃপ্ত ফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। তাছাড়াও সেরোটনিন নামক একটি হরমোন উৎপাদনে কলা ভূমিকা রাখে যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। কলাতে অবস্থিত ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা ডাকে যা খিদা নিয়ন্ত্রণের সহায়ক।তাই আমাদের ওজন কমানোর প্রচেষ্টায় আমরা একটু উপকার পাই।

সুরক্ষাঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা ত্বকের যত্নেও রয়েছে। কলার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং পকে থাকা ভুলের একটা কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া কলার পুত্র বহু প্রধান রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে এনিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। কলাতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন ও শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত কলা খেলে আর এর গঠন ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

তাছাড়া আরো অনেক কলা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে যা আপনারা নিজেরাই কলা খাওয়ার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন ।

কলা খাওয়ার অপকারিতা কি?

কলা অল্প দামি একটি ফল, যা বাংলাদেশে অনেক দেখা যায়। বাংলাদেশের প্রতিটি চায়ের দোকানে বিস্কুটের সাথে কলা কেক এগুলো থাকে। কিন্তু যেরকম কলা খাওয়ার উপকারিতা হয়েছে সেরকম কলা খাওয়ার অপকারিতাও রয়েছে। এখন আমরা কলা খাওয়ার অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব-

ওজন বৃদ্ধিঃ কলা যেরকম ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে সেরকম অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ওজন বৃদ্ধি পায়। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি এবং প্রাকৃতিক চিনি। যার শরীরের বিভিন্ন বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এবং অতিরিক্ত গ্রহনে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বানিয়ে দেয়।যার ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

বিভিন্ন রোগঃ কলা খাওয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। যেমন উঁচু মানুষের জন্য কলা এলার্জির কারণ হতে পারে। ত্বকের র‍্যাশ পেটের সমস্যা ইত্যাদি এলার্জি লক্ষণ দেখা দেয়।তাছাড়াও যারা মাইগ্রেনের রোগী রয়েছে তাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা রয়েছে। কারণ কলায় উপস্থিত টিরামিনের জন্য মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয়। কলাতে রয়েছে অনেক পটাশিয়াম, অতিরিক্ত পটাশিয়াম খাওয়ার ফলে হাইপারক্যালিমিয়া হতে পারে,যা রিলিজ ফোন এবং পেশির সমস্যার কারণ হতে পারে। কলা খাওয়ার উপকারিতা বলতে গেলে ডায়াবেটিসের কথা না বললেই হয় না ।ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য অতিরিক্ত কলা খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ কলার প্রাকৃতিক চিনি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বানিয়ে দেয়।

ক্ষতিকর দিকঃ অতিরিক্ত ফলাফল অপকারিতা হিসেবে দাঁতের প্রতি হতে পারে। কলার চিনি দাতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত করে দেয় যার ফলে দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। কলায় উপস্থিত প্রাকৃতিক চিনি অতিরিক্ত শরীরে প্রবেশের ফলে রক্তে গ্লুকোজের স্তর বৃদ্ধি করে দেয়,যার ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।কলায় উপস্থিত ফাইবার অনেক সময় পেটের ভিতরে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি করে। যার ফলে অনেকে পেট ফাঁপার সমস্যায় ভুগছেন।

শরীরের তন্ত্রের সমস্যাঃ অতিরিক্ত কলা খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে অন্তরের সমস্যা হোক দেখা দেয় অনেক সময়। যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে । অনেক সময় কলা খাওয়ার ফলে পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। যার ফলে পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দেখা যায়। অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

লেখক মন্তব্য

কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং কলা খাওয়ার অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে দেখা যায়, এটি পুষ্টিকর হলেও সবকিছুর মত পরিমান মত খাওয়া উচিত।কারণ কলা খেলে যে উপকারটা পায় আবার সেই অতিরিক্ত কলা খাওয়ার ফলে উপকার অপকারে পরিণত হয়। আমাদের উচিত সুস্থ থাকার জন্য সঠিক পরিমাণে প্রতিদিন কলা খাওয়া।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার মন্তব্যটি এখানে লিখুন

comment url